চুল পড়ার কারণ এবং বন্ধের দারুণ উপায়

 

চুল পড়ার ছবি
                

                          ছবিঃ- চুুল পড়া 

আপনি কি সৌন্দর্যের প্রতীক চুল সুন্দর, ঘন, কালো, লম্বা দেখতে চান? আপনার মাথার চুল কি পড়ে যাচ্ছে? অতিরিক্ত চুল পড়ার কারণে মাথায় টাক পড়ে যাচ্ছে? প্রতিদিন ঝরছে মাথার চুল, ফলে সৌন্দর্য কি দিন দিন হারাচ্ছে? এবং তাঁর জন্য আপনি কি চুল পড়ার কারণ ও কার্যকরী সমাধান চান? তাহলে এই টিপসটি আপনার জন্য। এখানে আপনি চুল পড়ার কারণ ও প্রতিকার,যত্ন সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা পাবেন এবং চুলের যত্ন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

বর্তমানে চুল পড়া আমাদের একটি ভয়ংকর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। চুল পড়ে না এমন মানুষ খুবই কম পাওয়া যাবে। ছেলে মেয়ে উভয়েরই এই সমস্যা হয়ে থাকে। আর এই চুল পড়া নিয়ে আমাদের মাঝে রয়েছে নানা দুশ্চিন্তা ও উদ্বেগ। মানুষের সৌন্দর্যের প্রতীক বলা হয় চুলকে। চুল পড়া, চুল উঠে যাওয়া বা চুল পাতলা হয়ে যাওয়া সত্যি কিন্তু চিন্তার বিষয়। কারণ চুল পড়ে নতুন চুল না গজালে আস্তে আস্তে মাথায় টাক পড়ে যায়। ফলে দিন দিন সৌন্দর্য হারিয়ে যায়।

অনেকে চুল পড়া নিয়ে তেমন কোন চিন্তায় করে না আবার অনেকেই চুল পড়া সহ্য করতে পারে না, চুল পড়া কিভাবে বন্ধ করা যায়, কিভাবে শক্ত করা যায় তাঁর উপায় খুঁজতে থাকে। সঠিক ও কার্যকরী উপায় না জানার কারণে চুল পড়া তো বন্ধ হচ্ছে না বরং আরও বেশি করে চুল পড়ছে। একটা কথা সবসময় মনে রাখবেন- কোনো বিষয়ে সমাধান জানতে হলে আগে আপনাকে বুঝতে হবে সমস্যাটি কেন হচ্ছে, ভালোভাবে কারণ গুলো জানা উচিত। আপনি যদি বুঝতে পারেন যে কেন চুল পড়ছে, তবে আপনার চুল পড়া নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে এবং অর্ধেক সমাধান পেয়ে যাবেন।

চিকিৎসা বিজ্ঞানের তথ্যানুযায়ী, প্রতিটা চুলের জীবনকাল দুই থেকে আট বছর। গড়ে মানুষের মাথায় ১০ হাজার চুল থাকে। প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫ টি চুল পড়া স্বাভাবিক।কিন্তু বেশি চুল পড়লে অবশ্যই চিকিৎসা নেওয়া উচিৎ।

যেভাবে বুঝবেন আপনার চুল পড়ে যাচ্ছে!!!

আপনার অতিরিক্ত চুল পড়ছে এই চুল গুনে বের করা সম্ভব হয়ে উঠে না।তাই বৃদ্ধাঙ্গুলিসহ চার আঙুল দিয়ে ধরে আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত টান টান করে ধরুন। যদি ছয়টি বা তার বেশি চুল উঠে আসে, তবে বুঝতে হবে অতিরিক্ত চুল পড়ছে। আর তখনই এর প্রতিকার খুঁজতে হবে।

চুল পড়ার কারণ গুলো হলোঃ-

আসলে চুল পড়ার রয়েছে অনেক কারণ। তবে সঠিক যত্নের মাধ্যমে চুলের সুস্বাস্থ্য ধরে রাখা সম্ভব। এই অণুচ্ছেদে আমরা চুল পড়ার প্রধান কারণ গুলো জানবো এবং কিভাবে এর কার্যকরী সমাধান করা যায় তার বিস্তারিতভাবে জানবো।

চুল পড়ার কারণ গুলো হচ্ছেঃ –

1.বংশগত – চুল পড়ার অন্যতম একটি কারন বংশগত। অধিকাংশ গবেষণায় দেখা গেছে বংশের কারণে ও অনেকের চুল পড়া সমস্যায় পড়তে হয়। অর্থাৎ বংশে কারও টাক থাকলে আপনারও টাক হওয়াটা স্বাভাবিক। এইটা বেশির ভাগ ছেলেদের হয়ে থাকে, তবে মহিলাদের ক্ষেত্রে টাক হয় না, ৩০ থেকে ৪০ ভাগ চুল পড়ে যায়।

2.পুষ্টিকর খাবারের অভাব – চুল পড়ার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হচ্ছে পুষ্টিকর খাবারের অভাব। প্রোটিন চুলের জন্য একটি কার্যকরী ও প্রয়োজনীয় উপাদান। চুলের গোঁড়া শক্ত করতে ও সুস্থ রাখতে যথেষ্ট প্রোটিনের দরকার হয়। এবং পুষ্টিকর খাবারের মধ্যেই কিন্ত পর্যাপ্ত ভিটামিন, প্রোটিনসহ ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ইত্যাদি উপাদান থাকে। তাই নিয়মিত পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর খাবার খান, যা চুল ভালো রাখতে অনেকটা সহায়তা করবে।

3.ভিটামিনের স্বল্পতা – ভিটামিন আমাদের পুরো শরীরের জন্য অনেক দরকারি একটি উপাদান। ভিটামিন বি-১২ ও ভিটামিন-ডি’র অভাবে চুল যায়। কারণ চুলের বৃদ্ধি ও মাথার ত্বকের পুষ্টি যোগাতে ও গোঁড়া শক্ত, মজবুত, কালো ও মসৃণ করতে এবং চুল মোটা করতে এই ভিটামিন গুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। মাংস ও দুগ্ধজাত খাবারে ভিটামিন-১২ ও ভিটামিন-ডি পাওয়া যায়। এইসব ভিটামিনের অভাবে চুল পড়ে যায়।

4.অতিরিক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার – চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে আমরা কত কিছুই না করে থাকি। অনেক কিছুর মধ্যে প্রায় অধিকাংশ মানুষ বিশ্বাস করে শ্যাম্পু ব্যবহার করলে চুলের স্টাইল করা। হ্যাঁ শ্যাম্পু ব্যবহার করে চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা যায়, তবে অতিরিক্ত না। চুল পড়ার কারণ গুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করা। বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা প্রায় বলে থাকে চুল পড়া রোধে অতিরিক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার কমিয়ে দিন।

5.বিভিন্ন রোগের কারণে – হ্যাঁ বিভিন্ন রোগের কারণেও চুল পড়ে থাকে। অর্থাৎ দেহে কোন রোগ হলে সব জাইগায় এর প্রভাব ফেলে। অধ্যাপক ডা. লে. কর্নেল মো. আব্দুল ওয়াহাব, যিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়য়ের চর্ম ও যৌন রোগের বিশেষজ্ঞ। তিনি এন টিভির সাক্ষাৎকারে চুল পড়া নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে বলেছিলেন, মানুষের বিভিন্ন কারণে চুল পড়তে পারে, অতিরিক্ত শ্যাম্পু করার কারণে চুল পড়ে, কারো হইতো জ্বরের জন্য ও কার হইতো ক্যান্সারের কারণে চুল পড়ে থাকে এবং কিছু মানুষের বংশগত কারণে ও হয়ে থাকে।

6.অ্যান্ড্রোজেনিক হরমোন – নারীর চুল পড়া ও পুরুষের টাকের সবচেয়ে বড় কারণ। এই হরমোন সাধারণত পুরুষের শরীরে বেশি পরিমাণে থাকে। এটি চুল পড়ে যেতে অনেক সাহায্য করে। অর্থাৎ যাদের শরীরে এই হরমোনের প্রভাব বেশি, তাদেরই বেশি করে চুল পড়ে। নারীর মেনোপজের সময় ও পরে অ্যান্ড্রোজেনিক হরমোন আনুপাতিক হারে বেড়ে যায়। তখন হঠাৎ চুল বেশি করে পড়তে শুরু করে।

7.দুশ্চিন্তা বা মানসিক সমস্যা – মানসিক সমস্যা বা দুশ্চিন্তা যে কতটা ভয়ংকর এবং শরীরের জন্য কতটা ক্ষতিকর তা আমরা অনেকেই জানি না। দুশ্চিন্তা করলে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়। এবং এর মাত্রাতিরিক্ত মানসিক চাপের ফলে চুল পড়ে যায়। দীর্ঘদিন মানসিক দুশ্চিন্তায় থাকলে বা দুশ্চিন্তা কাটিয়ে উঠতে না পারলে অনেক বেশি চুল পড়ে যেতে পারে।

8.চুলের যত্নের অভাব – চুল সৌন্দর্যের প্রতীক। এবং এই সৌন্দর্য ধরে রাখার জন্য অবশ্যই আপনাকে নিয়মিত সঠিক উপায়ে চুলের যত্ন নিতে হবে। আমরা অনেকেই সঠিক ভাবে চুলের পরিচর্যা করি না অথচ চুল পড়া নিয়ে অনেক উদ্বিগ্ন ও দুশ্চিন্তায় থাকি। চুলের স্টাইল করলে, সাবান ব্যবহার করলে, মেয়াদ উত্তীর্ণ শ্যাম্পু ব্যবহার করলে এবং খুশকি দূর না করলেই চুলের অযত্ন হয়। যেকোনো জিনিসের সঠিক ও পর্যাপ্ত যত্নের অভাব হলে নষ্ট হয়ে যায়, ঠিক তেমনি চুলের যত্নের অভাব হলে এটিও জরে যায়।

9.ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় – আমাদের অনেকের বিভিন্ন ধরনের রোগ হয়ে থাকে, কিছু মানুষের আবার অস্ত্রোপচার বা অপারেশন ও করা হয়ে থাকে। এবং তাঁর জন্য এন্টিবায়োটিক সহ অনেক উচ্চ পাওয়ারের ওষুধ দিয়ে থাকে আর এই ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ও চুল পড়ে থাকে। এছাড়াও প্রেসারের ওষুধ, রক্ত তরল করণের ওষুধ, হরমোন, মানসিক অসুস্থতার ওষুধ ইত্যাদির জন্য ও চুল পড়ে থাকে।

10.মাদকাসক্তি – মাদকাসক্তির ফলে শরীরের অনেক ক্ষতি হয়। এককথায় অতিরিক্ত মাদক সেবনের ফলে শরীর নিষ্ক্রয় হয়ে যায়। এবং চুল পড়ার কারণ হিসেবেও মাদকাসক্তি অন্যতম। অ্যালকোহল, ড্রাগস এসবের আসক্তি আপনার মাথার মূল্যবাণ চুলগুলোকে অসময়ে কেড়ে নিতে পারে। এমনিতেই এসবের কুফল অনেক। স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিও প্রচুর।

চুল পড়া বন্ধ করার কার্যকরী সমাধানঃ –

প্রথম দিকে একটা কথা বলেছিলাম, সেটি হচ্ছে যেকোনো সমস্যার কারণ গুলো যদি সঠিক ভাবে চিহ্নিত করা যায়, তাহলে খুব সহজে ওই সমস্যা গুলো সমাধান করা যায়। যে কারণ গুলোর জন্য চুল পড়ে যায়, সেগুলো প্রতিরোধ করতে পারলেই কিন্ত চুল পড়া অনেকখানি বন্ধ করা যাবে। তারপরে ও পয়েন্ট আকারে সুন্দর ও বিস্তারিত ভাবে উল্লেখ্য করছি যেন খুব সহজে মনে থাকে।

• শরীর স্বাস্থ্যকে সবসময় সতেজ রাখতে হবে।

• নিয়মিত পুষ্টিকর ও সুষম খাবার খেতে হবে।

• যেসব খাদ্যে পর্যাপ্ত ভিটামিন বি-১২ ও ভিটামিন-ডি থাকে, সেগুলো খেতে হবে।

• বিভিন্ন রোগের ফলে চুল পড়ে থাকে তাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে।

• অতিরিক্ত শ্যাম্পু বা সাবান ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে।

• মেয়াদ উত্তীর্ণ কোন তেল বা শ্যাম্পু দেওয়া যাবে না।

• অ্যান্ড্রোজেনিক হরমোন নিয়ন্ত্রণে বা কমানোর চেষ্টা করতে হবে।

• সবসময় অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা বা মানসিক চিন্তা করা যাবে না।

• নিয়মিত চুলের সঠিক পরিচর্যা করতে হবে।

• কোন ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে কিনা ডাক্তারের কাছ থেকে জেনে নেওয়া উচিত।

• মাদকাসক্তিতে আসক্ত হওয়া যাবে না, এখান থেকে বের হয়ে আসতে হবে।

• অতিরিক্ত রঙ করে, রিবন্ডিং করে হেয়ার স্টাইল করা যাবে না।

• চুল পরিষ্কার ও খুসকি মুক্ত রাখতে হবে সবসময়।

• চুলের আর্দ্রতা ধরে রাখতে এবং ফ্রিজমুক্ত
রাখতে ময়েশ্চারাইজিং শ্যাম্পু ব্যবহার করুন।

ভেজা চুলের আঁচড়ানো থেকে বিরত থাকতে হবে এবং সর্বশেষে ভালো অভিজ্ঞ ডাক্তারের কাছে যান ও পরামর্শ নিন।

এইসব কিছুতে যদি পর্যাপ্ত ফলাফল না পান, অর্থাৎ চুল পড়া বন্ধ না হয় তাহলে অবশ্যই আপনাকে খুব শীগ্রয় বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

চুলের যত্ন নেওয়ার টিপসগুলো হলোঃ-

সৌন্দর্য ধরে রাখার জন্য অবশ্যই চুলের সঠিক পরিচর্যা ও যত্ন নিতে হবে। চুল পড়ে গেলে সবাই আফসোস করে বা অনেকের মন খারাপ হয়ে থাকে, কিন্ত আদৌ কি চুল পড়ার কারণ গুলো চিহ্নিত করেছি, কিভাবে সঠিক উপায়ে পরিষ্কার পরিছন্ন ও ভালো রাখা যায় এই সম্পকে ধারণা আছে কি আমাদের। প্রকৃতপক্ষে দৈনন্দিন জীবনের ব্যস্তার কারণে নিয়মিত চুলের সঠিক যত্ন নেওয়া প্রায় অনেকের কাছেই অসম্ভব। হ্যাঁ চুল সুস্থ সুন্দর ও ভালো রাখতে প্রানবন্ত ফিরিয়ে আনতে অবশ্যই নিয়মিত যত্ন নিতে হবে এবং সেইটা সঠিক ও কার্যকরী উপায়ে হতে হবে।যদি আপনি চুল সুস্থ, ঘন ও খুশকিমুক্ত রাখতে চান, তাহলে অবশ্যই যত্ন নিতে হবে। মাথা ঘাম মুক্ত রাখুন, নিয়মিত তোয়ালে, চিরুনি, বালিশের কাভার পরিষ্কার করুন। তাই এই আর্টিকেলে আমরা জানবো চুলের যত্ন নেওয়ার ৭টি দরকারি টিপস, যার ফলে খুব সহজেই চুল পড়া কমিয়ে বা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবো এবং চুলের গুড়া শক্ত ও মজবুত করাসহ অসাধারণ ও মসৃণ চুল হিসেবে রাখতে পারবো।

চুলের যত্ন নেওয়ার ৭টি টিপস

1. চুলের যত্নে পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে।

2.সবসময় চুল সুরক্ষিত ও পরিষ্কার রাখুন।

3.মাঝেমাঝে ভালো মানের শ্যাম্পু ব্যবহার করুন।

4.বিশুদ্ধ নারিকেল তেল ব্যবহার করুন।

5. ভেজা অবস্থায় চুল আঁচড়াবেন না।

6. অতিরিক্ত হিট দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।

7.মাঝেমাঝে চুলের যত্নে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

আরও পড়ুন দুর্দান্ত সব লেখা 👇

শীতকালে ঘরুয়া উপায়ে ঠোঁটের যত্ন নেওয়ার টিপস

https://bestsajguj.blogspot.com/2020/09/blog-post_26.html

বিয়ের অনুষ্ঠানের শাড়ি ও কসমেটিকস পণ্যের তালিকা

https://bestsajguj.blogspot.com/2020/10/blog-post_10.html

1. চুলের যত্নে পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে।


চুলের যত্ন নেওয়ার প্রথম ও প্রধান ধাপ হচ্ছে নিয়মিত পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার খাওয়া। কারণ পুষ্টিকর খাবারের অভাবে চুল পড়ে যেতে পারে। চুলের গোঁড়া শক্ত ও মজবুত করার জন্য, কালো ঘন ও সুস্থ সুন্দর চুলের জন্য আপনাকে প্রোটিন, ভিটামিন ও ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে।

2.সবসময় চুল সুরক্ষিত ও পরিষ্কার রাখুন।

চুলের যত্নে গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ হচ্ছে সবসময় সুরক্ষিত ও পরিষ্কার রাখা। যেকোনো জিনিস যদি সঠিক ও সুন্দর উপায়ে না ব্যবহার করেন বা অপরিষ্কার রাখেন, তাহলে সে জিনিসটা খুব তারাতারি নষ্ট হয়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। ঠিক চুলের ক্ষেত্রে ও এটি প্রযোজ্য।অর্থাৎ আপনাকে প্রতিনিয়ত, ধুলা বালু ও ময়লা থেকে সুরক্ষিত রাখতে হবে, এবং বাহিরে কোথায় বের হলে, বাসার আসার সাথে সাথে পরিষ্কার করতে হবে। তাহলেই আপনার চুল সুস্থ সুন্দর থাকবে।

3. মাঝেমাঝে ভালো মানের শ্যাম্পু ব্যবহার করুন।


অতিরিক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করলে অনেক ক্ষতি হয় এবং চুল পড়ার অন্যতম কারণই হচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করা। তবে ভালো মানের শ্যাম্পুর উপকারিতা ও রয়েছে যথেষ্ট। চুল পরিষ্কার রাখতে ও খুসকি দূর করতে ভালো মানের শ্যাম্পু অনেক অবদান রাখে। তাই সবসময় এক কোম্পানির শ্যাম্পু এবং ২/৩ দিন পর পর ভালোভাবে সঠিক নিয়মে ম্যাসেজ করবেন। এর ফলে চুলের গোঁড়া শক্ত ও মজবুত হয়, ময়লা দূর হয় এবং চুলকে করে তুলে আরও সুন্দর ও মসৃণ। বর্তমানে ছেলেদের জন্য ভালো শ্যাম্পু গুলো হচ্ছে, ক্লিয়ার, ডাব ইত্যাদি। তারপরেও দেখে শুনে নিবেন।

4.বিশুদ্ধ নারিকেল তেল ব্যবহার করুন।

চুল ভালো রাখার জন্য, সঠিক উপায়ে যত্ন নেওয়ার জন্য এবং চুল পড়া কিছুটা প্রতিরোধ করার জন্য, অবশ্যই আপনাকে বিশুদ্ধ নারিকেল তেল ব্যবহার করা উচিত। চুল ভালো রাখার জন্য এটি অনেক উপকারি। ১০০ গ্রাম নারকেল তেলে ৮৯০ ক্যালোরি পাওয়া যায়। চুল ভালো করে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে শুকানোর পর, নারিকেল তেল ব্যবহার করা যেতে পারে, যা চুলের স্বাস্থ্য জন্য অনেকটাই কার্যকরী ও উপকারি।

5.ভেজা অবস্থায় চুল আঁচড়াবেন না।

ভেজা অবস্থায় চুল আঁচড়ানো থেকে বিরত থাকুন। কারণ ভেজা চুল সবথেকে ভঙ্গুর অবস্থায় থাকে। ভেজা অবস্থায় থাকাকালীন সময়ে চুলের গোড়া নরম হয়ে থাকে, একটু বেশি চাপ পড়লে উঠে যেতে পারে। এবং গোসল করার সময়ে ভিজে থাকার ফলে চুল ভেঙে যাওয়া সবচেয়ে সহজ তাই শ্যাম্পু করার সময় চুলে বেশি চাপ প্রয়োগ করা উচিত নয়। তাছাড়া গোসল করার পর সাথে সাথে আছড়ানো থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে।

6.অতিরিক্ত হিট দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।

আমরা অনেক সময় চুলের স্টাইল করতে বা চুলের যত্নে অনেক ধরনের উপায় অবলম্বন করি। অনেকে আবার অতিরিক্ত হিট এর মাধ্যমে চুলের যত্ন নিতে চাই ও বিভিন্ন ধরনের স্টাইল করতে চাই, যা চুলের জন্য অনেক ক্ষতিকর। তাপ চুলকে ভেঙে যেতে সহায়তা করে এবং চুলের গোঁড়ায় অনেক চাপ সৃষ্টি করে ফলে নষ্ট হওয়ার সম্ভবনা বেশি, তা অতিরিক্ত হিট দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।

7.চুলের যত্নে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।


চুলের যত্নে আমরা অনেক প্রয়োজনীয় উপায় অনুসরণ করি আবার মাঝে মাঝে অপ্রয়োজনীয় ও অকার্যকরী কিছু জিনিস মেনে চলি না জেনে বা বুঝে। যার ফলের একটা সময় চুলের জন্য অনেক সমস্যায় পড়তে হয়, অর্থাৎ খুব বেশি পরিমাণে চুল উঠতে থাকার কারণে টাক হয়ে যায়, যা ভালো দেখাই না। তাই আমাদের উচিত, প্রতি ৬ মাস পর পর ভালো এবং বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখানো। এরফলে আপনি জানতে পারবেন চুলের বর্তমান কি অবস্থা, চুল কি সব পড়ে যাচ্ছে কিভাবে কার্যকর ভাবে প্রতিরোধ করা যায় এবং আরও নিয়মাবলী। তাই চেষ্টা করবেন মাঝে মাঝে চুলের যত্নে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
                   
চুলের যত্নে কলাঃ

1.একটি কলা ভালো মতো পেস্ট করে নিন। এরপর এর সাথে ২ চামচ টক দই মিশিয়ে চুলে লাগান। সপ্তাহে একবার করে ব্যবহার করলে এক মাসের মধ্যেই পরিবর্তন লক্ষ্য করবেন। চুল আগের চেয়ে উজ্জ্বল এবং ঝলমলে হবে।

2. ২-৩ টি কলা পেস্ট করে এর সাথে ২-৩ চা চামচ মধু মিশিয়ে চুলের গোড়ায় এবং স্ক্যাল্পে ভালো মতো লাগান। এরপর মাথায় একটি শাওয়ার ক্যাপ বা তোয়ালে পেঁচিয়ে রাখুন। এক ঘণ্টা পর শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। নিষ্প্রাণ এবং ফ্রিজি চুলের জন্য এটি একটি কার্যকর হেয়ার মাস্ক।

3.২ চা চামচ ক্যাস্টর অয়েল, ২ চা চামচ নারিকেল তেল, একটি ডিম এবং একটি কলা ভালো মতো মিশিয়ে চুলে এবং স্ক্যাল্পে লাগান। ২ ঘণ্টা রেখে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। এই মাস্ক টি চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে এবং চুলকে নরম এবং রেশমি করে। ভালো ফল পেতে সপ্তাহে ২ বার ব্যবহার করুন।

পরিশেষে আশা করি আপনি চুল পড়ার কারণ ও সমাধান এবং যত্ন সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জেনেছেন।তারপরও কোন ধরনের সমস্যা মনে হলে একজন অভিজ্ঞতা সম্পুর্ন চিকিৎসকের  পরামর্শ নিন।চুল নিয়ে লেখা আমার এই কনটেন্ট বা লেখাটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন এবং সবার মাঝে ছড়িয়ে দিন যাতে করে যাদের চুলের সমস্যা আছে তারা উপকৃত হয়।সময় নিয়ে লেখাটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

মন্তব্যসমূহ

popular post

বিয়ের কসমেটিকস চেকলিস্ট বর ও কনে উভয়ের জন্য

মেকআপের জিনিসের নাম

চুলের খোপা বাঁধার ১০টি নতুন ডিজিটাল পারফেক্ট স্টাইল ছবি ও ভিডিওসহ!

লিপস্টিকের নাম এবং দাম

মুখের মেকআপ করার সঠিক নিয়ম

স্তন ঝুলে গেলে কি করবেন?