দাঁতের সৌন্দর্য বৃদ্ধির উপায়
দাঁতের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধির উপায়
সুন্দর ঝকঝকে সাদা দাঁতের হাসি আমরা সবাই ভালোবাসি।দৈনিক খাবার গুলো চিবিয়ে খেতে দাঁত আপনাকে সাহায্য করে থাকে।এটি ক্ষয় হয় এবং হলুদ আকৃতি ও পোকা ধরতে পারে।আপনার দাঁতকে অবহেলা করা উচিৎ নয়।আকর্ষণীয় হাস্যউজ্জ্বল দাঁতের গুরুত্ব অপরিসীম।আপনার দাঁতের যত্ন নেওয়া উচিৎ।
দাঁতের সমস্যা
দুঃখজনকভাবে বর্তমানে দাঁত ক্ষয় ও দাঁতে ছিদ্র হওয়া,দাঁত হলুদ,ভাঙা,ফাঁকা,মুখে দুর্গন্ধ, কালো দাগযুক্ত দাঁত একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।দাঁতের এই সমস্যাগুলো আপনার দাঁতের সৌন্দর্য্যকে নষ্ট করে এবং আপনাকে যন্ত্রণা দেয়।এটি মর্যাদাকে নষ্ট করে এবং আপনার আত্মবিশ্বাস ও ব্যক্তিত্বকেও কমিয়ে দেয়।
এটি আপনার জন্য একটি জটিল চ্যালেঞ্জ।
মূলত ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের ফলেই দাঁত ক্ষয় হয়ে থাকে।বিশেষজ্ঞদের মতে প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৮ জন দাঁতের সমস্যায় ভুক্তভোগী।সাধারণত শিশু টিনএজার ও বয়স্কদের এই সমস্যাগুলো বেশি দেখা যায়।
দাঁতের যত্ন নেওয়ার টিপস
♦প্রতিদিন সকালে এবং রাতে ঘুমানোর আগে ভালোভাবে দাঁত ব্রাশ করা উচিৎ।
♦চর্বি ও শর্করাযুক্ত খাবার দাঁতের ফাঁকে জমে দাঁতকে দ্রুত ক্ষয় করে এবং দাঁতের মসৃণতা নষ্ট করে।অবশ্যই দাঁত ব্রাশ করে কুলি করা উচিৎ।
♦সম্ভব হলে খাবার পানি ফুটিয়ে পান করবেন।বেশি ঠান্ডা পানি এবং আইসক্রিম খাওয়া উচিৎ নয়।
♦অবশ্যই প্রতিদিন দাঁত ব্রাশের সময় উপরে, নিচে,ভেতরে,বাইরে ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে।
♦দাঁতের ফাঁকে দীর্ঘদিন ময়লা জমে থাকলে ক্ষুদ্র পাথর কণায় পরিণত হয় এবং দাঁতে কালো দাগ পড়ে। প্রতি ছয় মাস পরপর দাঁতের স্কেলিং করা উচিৎ।
♦প্রতি ৩ মাস পর ব্রাশ পরিবর্তন করুন। সমান্তরাল ও বাঁকা দন্ড ঢাকনাযুক্ত ব্রাশ ব্যবহার করুন।প্রতি মাসে আপনার পরিষ্কার করুন।
♦দাতের ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধির জন্য মাঝে মধ্যেই মাউথ ওয়াশ দিয়ে কুলি করুনএবং ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ শাক-সবজি খান।
♦প্রতিষ্ঠিত ব্রান্ডের টুথপেস্ট ব্যবহার করা উচিৎ।হারবাল বা নিম জাতীয় টুথ পাউডার ব্যবহার করতে পারেন।
♦অ্যালকোহল ও ধূমপান থেকে বিরত থাকুন।প্রতি সপ্তাহে অন্তত একটা ভিটামিন-সি ট্যাবলেট খান।
♦কৃত্রিম দাঁতের প্রতি বিশেষ যত্ন নিন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেগুলো খুলে পরিষ্কার করুন।
♦বছরে অন্তত একবার দাঁতের চেক আপ করানো জরুরী।অবশ্যই একজন অভিজ্ঞতা সম্পুর্ন দন্ত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ।
দাঁতের যত্নে খাবারের ভূমিকা
গাজরের বিটা ক্যারোটিন দাঁতের ক্ষয় প্রতিরোধ এবং হাড়ের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সাহায্য করে।
দাঁতের যত্নে ভিটামিন 'এ' জাতীয় খাবার খাওয়া উচিৎ।যেমনঃ-পালংশাক,কচু শাক,ইত্যাদি।
ভিটামিন 'সি'
আনারসে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন 'সি' রয়েছে।আপনার দাঁতে ও মাড়িতে জমা ব্যাকটেরিয়া গুলো ধ্বংস করে এবং ইনফেকশন ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে থাকে।
ফুলকপি এবং ক্যাপসিকাম দাঁত ও মাড়ির ইনফেকশন দূর করতে সাহায্য করে থাকে।কমলা লেবু দাঁত ও মাড়িকে সুস্থ্য রাখে।
দুধ,ডিম,দই পনির ইত্যাদি খাবার গুলো দাঁত ও মাড়িকে সুস্থ্য রাখতে সাহায্য করে থাকে।
গ্রিন টি
এটিতে ট্যানিন ও পলিফেনল এবং ফ্লুওরাইড রয়েছে।ফলে দাঁতে এনামেলের ক্ষয় রোধ করে।
ব্রকোলি
এটি আপনার দাঁতের এনামেলের ক্ষয় রোধ করতে সাহায্য করে থাকে।
রসুনে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল,অ্যান্টি ভাইরাল, অ্যান্টি ফাংগাল রয়েছে এবং এটি মুখের ইনফেকশন দূর করতে সাহায্য করে থাকে।
মাছ
মাছের মধ্যে থাকা ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড ও ভিটামিন 'ডি' দাঁত সুস্থ রাখে।
আপেল
এটি আপনার দাঁত এবং মাড়িকে সুস্থ রাখে এবং দাঁতের সৌন্দর্য বৃদ্ধির উপায়।
প্রতিদিন সকালে লেবুর রস খাওয়া উচিৎ।কারণ লেবু আপনার দাঁতের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
পেয়ারা
পেয়ারা দাঁতের ইনফেকশন ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে থাকে।
দাঁতের যত্ন যে সকল অভ্যাস ত্যাগ করা উচিৎ
চুইংগাম,মদ,পান,জরদা,সিগারেট,হিরোইন,
আফিম,গাঁজা,ইত্যাদি নেশাজাতীয় দব্য ত্যাগ করতে হবে।
দাঁতের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য চিকিৎসা পদ্ধতি
দাঁতের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে জনপ্রিয় এবং বহুল প্রচলিত কসমেটিক ডেনটিসট্রি।এটি হলো
ওরাল সার্জারি,অর্থোডোনসিয়া,কনসারভেটিভ ডেনটিসট্রি, প্রসথোডনটিকস ইত্যাদি।
দাঁতের শেডের সাথে মিলিয়ে ফিলিং করা হয়ে থাকে।দাঁতের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য কালার ম্যাচিং বা কসমেটিক ফিলিং করা উচিৎ।
মেটালিক ফিলিং এবং কালার ম্যাচিং বা কসমেটিক ফিলিং বেশ জনপ্রিয় পদ্ধতি।
দাঁত আঁকাবাকা,চোয়ালটা সামনের দিকে দাঁতগুলো ফাঁকা,দাঁতে কোনো দাগ লেগে গেছে,দাঁতের গঠন ছোট ইত্যাদি সমস্যা গুলো পুনর্গঠন করে সুন্দরভাবে আবার সঠিক অবস্থানে নিয়ে আসার পদ্ধতিকেই কসমেটিক ডেনটিসট্রি বলে।
ফাঁকা দাঁতের নির্দিষ্ট পরিমাণ দুই মিলিমিটার। এর বেশি হলে অর্থোডোনটিক বা ক্রাউন ব্রিজ দন্ত চিকিৎসা দেওয়া হয়ে থাকে।
দাঁত ক্ষয়ের চিকিৎসা ব্লিচিংও লেজারের মাধ্যমে করা যায়।লেজারের সাহায্যে নরম টিস্যু,শক্ত টিস্যু কাটা যায় এবং রোগীর রক্তপাত হয় না।
ধূমপান বা পান খাওয়ার ফলে যদি দাঁতের
সমস্যা হয় তাহলে স্কেলিং পলিশিং করা হয়ে থাকে।যদি এই সমস্যা দূর করা সম্ভব না হয় তাহলে কম্পোজিট ফিলিং করা উচিৎ।
বিভিন্ন কারণে দাঁতের রং কালো হতে পারে।
বিশেষ করে নারীর গর্ভাবস্থায় দাঁতের রং কালো হয়ে যেতে এবং দাগ পড়তে পারে।সেই ক্ষেত্রে ব্লিচিং চিকিৎসা দেওয়া হয়ে থাকে।
দাঁতের কালো রং দূর করতে এমালগাম ফিলিং করা হয়। এই ফিলিং এমনিতেই আটকে যায় এবং কেমিক্যাল লক হয়ে যায়। ফলে যতটুকু অংশ কালো হয়েছে ঠিক ততটুকু অংশই সুন্দর ফিলিং হয়ে যাবে।
দাঁতে পাথর হলে ফিলিং করা হয় এবং ক্যাপ পরানো হয়।বেশি ভয়ানক হলে রুট ক্যানেলও করা হয়ে থাকে। তবে এসব চিকিৎসা খুব ব্যয়বহুল ও সময়ের ব্যপার।
কেন আপনার দাঁতের রং হলুদ হয়?
দাঁতের বয়স বৃদ্ধি
জিনগত কারণ
ভাল করে দাঁত পরিষ্কার না করা
মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণ চা ও কফি খাওয়া
বেশি মাত্রায় সিগারেট বা তামাক সেবন
অ্যান্টিবায়োটিকের প্রভাব
আবহাওয়ার ইত্যাদি
দাঁতের হলুদ ভাব দূর করার সমাধান
কমলা লেবু
দাঁতের সৌন্দর্য ফেরাতে কমলা লেবু দারুন উপকারে লাগে।প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে অল্প করে কমলা লেবু নিয়ে দাঁতে ঘষুন।কারণ এতে থাকা ভিটামিন-সি এবং ক্যালসিয়াম দাঁতের মাইক্রোঅর্গানিজিমের সঙ্গে লড়াই চালায়। ফলে ধীরে ধীরে হলদেটে আবরণও সরে যেতে শুরু করে।
স্ট্রবেরি
কয়েকটি স্ট্রবেরিকে পিষে নিয়ে পেস্ট বানিয়ে নিন। তারপর সেই পেস্ট দাঁতে ব্যাবহার করুন এবং যাদু দেখুন।অবশ্যই কয়েক সপ্তাহ করতে হবে হবে।
লবন
এটি দাঁতের পুষ্টির ঘাটতি দূর করে এবং সৌন্দর্য
বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন প্রতিদিন সকালে বেকিং সোডার সাথে লবন মিশিয়ে দাঁত মাজলে হলুদ ভাব দূর হয় এবং দাঁতের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়।দন্ত
চিকিৎসকগন দাঁত ব্যথায় এবং শিরশির ভাবের জন্য হালকা হলকা গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে কুলি করতে পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
তুলসি পাতা
তুলসি পাতা শুকিয়ে গুড়ো করে পাউডার তৈরি করে টুথপেস্টে মিশিয়ে দাঁত ব্রাশ করুন।এটি খুব বেশি কাযকরী ফলাফল দেয় এবং
পায়োরিয়া, ক্যাভিটিসহ আরও সব দাঁতের রোগের প্রকোপও হ্রাস পায়।
আপেল
এটি দাঁতের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য সহায়তা করে থাকে।দৈনিক একটি করে আপেল খাওয়া উচিৎ।
কয়লা
বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার করে দাঁতের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায় কয়লার মাধ্যমে।
পরিশেষে আপনার দাঁতের যত্ন নেওয়ার জন্য একজন অভিজ্ঞতা সম্পুর্ন দন্ত চিকিৎসক পরামর্শ নেওয়া উচিৎ।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comment policy
1.Dont bad comment
2.you can give inspire to us
3.Avoid the hegistation
4.please follow to us
5.Read and accept good think.
6.share and spread among friend and families
7.give new idea about beauty